Facebook Metaverse
বর্তমানে আলোচিত একটি বিষয় হলো ফেইসবুক Meta. (Metaverse) মেটাভার্স হল যেখানে ভৌত এবং ডিজিটাল জগত একত্রিত হয়। এটি এমন একটি স্থান যেখানে মানুষের ডিজিটাল উপস্থাপনা - অবতাররা - কর্মক্ষেত্রে।
What is metaverse? “মেটাভার্স” আসলে কী?
ধরুন আপনি রাস্তায় হাঁটছেন বা বাড়িতে বসে আছেন। হঠাৎ আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কিছু মনে আপনি মনে করলেন, এবং আপনি ভাবলেন, সেই জিনিসগুলি আপনার পাশে রাখা আছে বলে আপনার মনে হচ্ছে। ‘মেটাভার্স’ এমনই একটি ফ্যান্টাসি জগৎ যেখানে মানুষকে কম্পিউটার প্রভাবের মাধ্যমে ব্যস্ত রাখা যায়। মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন যে, আগামী সময়ে, ফেসবুক ‘মেটাভার্স’- এর মাধ্যমে লোকেরা ঘরে বসে বসে ভার্চুয়াল জগতে কাজ করতে পারবেন। মানুষ ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারবেন। মার্ক জুকারবার্গ স্বপ্ন দেখেন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ফেসবুককে সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল জগতে পরিণত করা সম্ভব যেখানে মানুষ এক জায়গায় থাকলেও অন্য মানুষের উপস্থিতি অনুভব করতে পারবেন।
হলিউড মুভি ‘Ready Player One’ দেখে থাকেন, তাহলে আপনি অবশ্যই ‘Metaverse’ কী? তার একটি আইডিয়া পেতে পারেন। মুভিটিতে এমন একটি কাল্পনিক বিশ্বকে তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে লোকেরা কেবল একটি ডিভাইসের সাহায্যে তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করে, সেখানে লড়াই করে, এবং নাচগান এমনকি খাওয়া দাওয়াও করে। সেই ভার্চুয়াল বিশ্ব সম্পূর্ণ একটি মাত্র যন্ত্র ব্যবহারে সবকিছু ঘটে। জুকারবার্গ তাঁর এই ভার্চুয়াল ধারণা নিয়ে আশাবাদী। তিনি বিনিয়োগকারীদের কাছে আহ্বান জানান, তাঁর এই নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগের জন্য।
ঘরে বসে অনলাইন শপিং করার সময় আমাদের পছন্দের পোশাকের ডিজিটাল সংস্করণে ট্রায়াল করে দেখার পরই অর্ডার দেওয়া যেত! তাহলে কেমন হতো ভাবতে অবাক লাগলেও হাতের মুঠোয় এই প্রযুক্তি আসাতে আর দেরি নেই।
ইতিমধ্যেই অনলাইনের ভার্চুয়াল জগৎকে সত্যিকারের বাস্তব পৃথিবীর সঙ্গে মেলানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর যে প্রযুক্তির জন্য ইন্টারনেটের দুনিয়ায় এই অভাবনীয় বিপ্লব হতে চলেছে তার নামই হল মেটাভার্স (Metaverse)।
Metaverse (মেটাভার্স কী)
সাধারণ মানুষের মেটাভার্স প্রযুক্তিকে আপাতত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর-এর কোন সংস্করণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে মেটাভার্স তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু হতে চলেছে। মেটাভার্স ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রযুক্তিবিদদের মতে বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সঙ্গে মেটাভার্সের তুলনা আজকের দিনের স্মার্ট-ফোনের সঙ্গে আশির দশকের মোবাইল ফোনের তুলনা করার মতো বলা যায়। এক্ষেত্রে কম্পিউটারের সামনে বসে না থেকে একটি ভিআর হেডসেট লাগিয়েই যে কোনও ওয়েবসাইটে যাওয়া যাবে।
অনেকেই মনে করেন মেটাভার্স প্রযুক্তিতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একটি ৩ডি অবতার বা চরিত্র থাকবে অর্থাৎ এটিই ব্যবহারকারীর প্রতিনিধিত্ব করবে। যা চারিদিকে ঘুরে বেড়ানো থেকে শুরু করে অন্যান্য চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে পারবে। তবে এখনও পর্যন্ত মেটাভার্স শুধু মাত্র চিন্তাভাবনার স্তরেই রয়েছে, কর্তৃপক্ষ এখনও এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে আসেনি।
সম্প্রতি মেটাভার্স (Metaverse) আলোচনায় আসার কারণ?
বিগত কয়েক বছর ধরেই ডিজিটাল জগতের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। তাই ধনী বিনিয়োগকারী এবং বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলির মধ্যে মেটাভার্স নিয়ে বিপুল উত্তেজনা রয়েছে।
একই সঙ্গে আগামী দিনে এটি ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হতে চললে কেউই যে পিছিয়ে থাকবে না তা বলাই বাহুল্য। আবার এই প্রথমবারের জন্য, ভিআর (VR) গেমিং-এ সংযোগের অগ্রগতি অনেকটাই প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার চলেছে।
ফেসবুকের নাম কেন উঠে এসেছে এই প্রসঙ্গে?
ফেসবুক (Facebook) যে সব বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সেই তালিকার প্রথম সারিতেই রয়েছে মেটাভার্স। তাই এই প্রযুক্তির সঙ্গে অবশ্যই অবিচ্ছিন্ন ভাবে যুক্ত রয়েছে সংস্থা। ইউরোপে এই প্রযুক্তি তৈরি করার জন্য ফেসবুক সম্প্রতি ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে। যেখানে বিশ্বে সব চেয়ে প্রচলিত এই সোশ্যাল মিডিয়াটি প্রচুর টাকাও বিনিয়োগ করেছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জন্য তারা তৈরি করেছে অকুলাস (Oculus) হেডসেট যা প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর সেটের তুলনায় দামে কম। কয়েকজন বিশ্লেষকের মতে, মেটাভার্সে সম্ভবত প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় সস্তায় অকুলাস হেডসেটগুলির মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করা হয়েছে ফেসবুকের তরফে।
সম্প্রতি মেটাভার্স দায়িত্বের সঙ্গে গড়ে তুলতে সাহায্য করার জন্য অলাভজনক গোষ্ঠীগুলির ফান্ডে $৫০এম (£৩৬.৩এম) বিনিয়োগ করেছে৷ যদিও প্রকৃতপক্ষে মেটাভার্সের বাস্তবায়নে আরও ১০ থেকে ১৫ বছর লাগবে।
মেটাভার্সে আর কে আগ্রহী?
ফোর্টনাইটের (Fortnite) নির্মাণকারী এপিক গেমসের (Epic Games) প্রধান মিস্টার সুইনি (Mr Sweeney) মেটাভার্স নিয়ে তাঁর তীব্র উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। অন্য দিকে, অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমগুলি কয়েক দশক আগের ইন্টার্যাকটিভ ওয়ার্ল্ড শেয়ার করেছে। তবে সেগুলি মেটাভার্স না হলেও এবিষয়ে বেশ ধারণা রয়েছে তাদের।
সম্প্রতি ফোর্টনাইট তাদের নিজস্ব ডিজিটাল জগতে তাদের প্রোডাক্ট বাড়িয়েছে, কনসার্ট, ব্র্যান্ড ইভেন্ট এবং আরও অনেক কিছু সঞ্চালনা করেছে। তাই মিস্টার সুইনির মেটাভার্সের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিকেও ইতিবাচক বলেই মনে করা হচ্ছে।
বর্তমানে, Unity নামের একটি 3D ডেভেলপমেন্টের প্ল্যাটফর্ম বাস্তব জীবনের ডিজিটাল টুইনস-এ বিনিয়োগ করছে এবং গ্রাফিক্স কোম্পানি এনভিডিয়া (Nvidia) 3D ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে সংযোগ রাখতে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে তার মেটাভার্স তৈরি করছে।
কাজ আর কত বাকি?
বিগত বছরগুলিতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল বেশ কিছু হেডসেট, যার সৌজন্যে ভার্চুয়াল পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ানোর সময় সব কিছু থ্রিডি বলে মনে হবে। এর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত, যেমন ২০২০ সালেই অকুলাস কোয়েস্ট ২ ভিআর (Oculus Quest 2 VR) গেমিং হেডসেটটি সেই বছরের ক্রিসমাসে জনপ্রিয় উপহারের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল।
আবার এনএফটিএসে (NFTs) সম্প্রতি অনেকের বিপুল আগ্রহ থাকায় তা ডিজিটাল পণ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততার সঙ্গে মালিকানা তদারকির একটি পথ বাতলে দিচ্ছে। এটি একটি ভার্চুয়াল অর্থনীতি কী ভাবে কাজ করবে তা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। আবার, এটাও অস্বীকার করা যায় না যে উন্নত প্রযুক্তির ডিজিটালের কাজের জন্য প্রয়োজন আরও ভালো, সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ৫জি-র মতো মোবাইল সংযোগ ব্যবস্থা যা মেটাভার্সের পক্ষে লাভজনক বলে স্বীকৃত হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রযুক্তিবিদদের মতে, ইন্টারনেটের গতি আরও দ্রুত হলে, বিশেষ করে ফাইভ-জি বাজারে আসার পরেই, মেটাভার্স সম্পর্কিত অনেক সমস্যার সমাধান ঘটবে।
যাই হোক, আপাতত মেটাভার্সের সব কিছুই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যদি মেটাভার্স মানুষের হাতের নাগালে আসে, তাহলে তা প্রযুক্তির দুনিয়ায় পরবর্তী দশকের কিংবা সম্ভবত আরও দীর্ঘ সংগ্রামের মাইলফলক হয়ে থাকবে বলা যায়।
Facebook-কে সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল মাধ্যমে পরিণত করার লক্ষ্যে মার্ক জুকারবার্গ
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ফেসবুককে সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল জগতে পরিণত করতে চান, বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ। তাঁর কোম্পানিকে এক নতুন পরিচয়ে পরিচিত করতে চান। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, আগামী পাঁচ বছরে তিনি চাইবেন মানুষ ফেসবুককে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি হিসেবে নয়, বরং ‘মেটাভার্স’ কোম্পানি হিসেবে চিনুক। জুকারবার্গের এই সাক্ষাৎকারের পর, ‘মেটাভার্স’ শব্দটি এখন ঘোরাফেরা করছে মানুষের মুখে মুখে। কিন্তু অনেকেই এটি সম্পর্কে জানেন না।
‘মেটাভার্স’ বিষয়টি ঠিক কী? এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলেন মার্ক জুকারবার্গ। মেটাভার্স শব্দটির প্রকৃত অর্থ ‘মহাবিশ্ব’। কী থাকবে সেই মহাবিশ্বে? তিনি বলেন, এটি হল এক ভার্চুয়াল জগৎ যেখানে মানুষের চিন্তা ভাবনা, কাজকর্ম, সবটাই সে করতে পারবে এই ভার্চুয়াল জগতের মধ্যে। প্রসঙ্গত করোনা মহামারী এবং ‘work from home’ এই দুইয়ের যৌথ কনসেপ্টে মানুষ এখন অনেকটাই ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে পরিচিত। জুকারবার্গ সেই কনসেপ্টের আরও ব্যাপক বিস্তারের কথা উল্লেখ করেন এই ‘মেটাভার্স’ শব্দের মাধ্যমে। যেখানে মানুষের চিন্তা ভাবনা, কাজকর্ম, কথোপকথন পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত হবে এই ভার্চুয়াল জগতের মধ্য দিয়েই।
মার্ক জুকারবার্গ আরও বলেছিলেন, “আমি আশা করি আমরা যদি এটি ভাল ভাবে করতে পারি তাহলে ফেসবুক শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া নয়, একটি মেটাভার্স সংস্থা হয়ে উঠবে। আশা করি আমরা আগামী পাঁচ বছরে আমাদের সংস্থার জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারব। তিনি বলেন, “আমার দৃষ্টিতে আমরা মানুষকে বোঝাব যে আমরা শুধু একটি সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি নই বরং একটি “মেটাভার্স” কোম্পানি। বর্তমানে আমরা সবাই অ্যাপ ব্যবহার করি, যা ব্যবহার করে মানুষই তাদের নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগ রেখে চলছে এবং সৃজনশীল ধারণা শেয়ার করছে।
মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুককে নতুন পরিচয় দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন আগামীদিনে যা হবে সম্পূর্ণ এক ভার্চুয়াল জগৎ। জুকারবার্গ বলেছেন, যে তিনি এবং তাঁর টিম এই ধারণা সৃষ্টিতে অনেক সময় ব্যয় করছেন। তিনি তাঁর স্বপ্ন নিয়ে অনেক ভাবছেন। তিনি অনুভব করেন যে, তিনি আজ, যা করছেন তা কেবলমাত্র বইয়ের একটি অধ্যায়। সম্পূর্ণ বই তিনি লিখতে চলেছেন, যার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের কাছে উন্মোচন করবেন এক ভার্চুয়াল জগতের। ‘মেটাভার্স’ – এর বর্ণনা করে জুকারবার্গ বলেছিলেন যে এটি একটি ‘দৃষ্টি’ যা পুরো প্রযুক্তি শিল্পকে প্রশস্ত করতে সহায়তা করবে।। তিনি এটিকে আগামী সময়ে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের এক নতুন অধ্যায় হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
#onlineacademy #saifulacademy #daaminbd #saiful #saifulsir #mdsaiful #saiful #saifulislam #দারসুলকোরআন
Post a Comment
0 Comments